মহা-মহাপ্রভু হরিচাদেঁর পঞ্চম আজ্ঞাঃ (পদ্য)
মহা-মহাপ্রভু হরিচাদেঁর পঞ্চম আজ্ঞাঃ
জাতিভেদ জ্ঞান, জানিও অজ্ঞান, সাধুজনে হও নত।
জগৎ জুড়িয়া আছে এক মহাজাতি,
মানুষ নামেতে তার আছে পরিচিতি ।
সকল মানুষে বহে এক রক্ত ধারা,
সুখ দুঃখে সমভাবে সবে আত্মহারা ।
প্রেম প্রীতি, দয়া মায়া, সবাকার মনে,
চিন্তা শক্তি, বিবেচনা আছে জনে জনে ।
মানুষে মানুষে নাই কোন ব্যবধান,
সকলেই বিধাতার অমৃত সন্তান ।
এ কারণে জাতিভেদ, বর্ণভেদ জ্ঞান,
নিতান্ত ঘৃণিত কাজ, শাস্ত্রের বিধান।।
বিভিন্ন ধর্মের যত প্রচারক চয়,
জ্ঞানে গুণে সমুন্নত, অতি সদাশয় ।
নানা পথে, নানা মতে বহুলোক চলে,
যত মত তত পথ জ্ঞানীজনে বলে।
সকল মহাত্মা রত জন হিত তরে,
ধর্ম নীতি কথা তাই জানায় অপরে ।।
একারণে তারা সবে মাননীয় হ'ন।
মহোন্নত জনে কর শ্রদ্ধা প্রদর্শন।
সকল ধর্মের যত সাধু ভক্তগণে,
যথোচিত শ্রদ্ধাভাব রাখিও যতনে।
বুদ্ধদেব, যীশুখৃষ্ট, গুরুজী নানক,
হযরত মহম্মদ ধর্মের জনক।
পুণ্যশ্লোক রবিদাস, সাধক কবীর,
সাধু সিদ্ধগণে সবে নোয়াইবে শির।
জ্ঞানী আর গুণীজনে জানাবে সম্মান,
জাতি কুল, বর্ণভেদ, যে করে , অজ্ঞান।
পরম করুণাময় শ্রীহরি ঠাকুর,
জাতি বর্ণভেদ জ্ঞান, করি দিলা দুর।
বিভেদ বিদ্বেষ বিষ, করিতে বিনাশ,
মহাপ্রেম বার্তা প্রভু করিলা প্রকাশ।।
বিশ্লেষণঃ
পবিত্র চরিত্র যারা, বিধাতার প্রিয় তারা, সাধু, জ্ঞানী বলে পরিচয় ।
সর্বকালে, সর্বদেশে, সাধু মহাত্মারা শেষে, নিজগুণে স্মরণীয় হয়।।
পুরাকালে জ্ঞানী গুণী, মহোন্নত ব্যাস মুনি, সর্বশাস্ত্রে পারদর্শী হ'ন।
বেদের বিধান যত, পুরাণাদি শাস্ত্র মত, মেধা বলে করে সংকলন ।।
শ্রীমহাভারত, গীতা, কাব্যগুণে বিভূষিতা, মহাগ্রন্থ রচিলা কৌশলে।
জ্ঞানে গুণে শ্রেষ্ঠ যারা, তাঁহাদের যশোধারা, সমুজ্জ্বল রহে ভূমণ্ডলে।।
জাতি বর্ণ ভেদ জ্ঞান, মানুষের অপমান, চিরতরে দূর কর সবে।
বিভেদ বিদ্বেষ বিষ, বিনাশিলে অহর্নিশ, বিশ্বশান্তি চিরস্থায়ী হবে।।