মহা-মহাপ্রভুর তৃতীয় আজ্ঞাঃ (গদ্য)
মহা-মহাপ্রভুর তৃতীয় আজ্ঞাঃ
মাতাপিতার প্রতি ভক্তি কর।
মাতা এবং পিতা কোন এক মাহেন্দ্রযোগে তাহাদের দুইটি দেহ ভাঙ্গিয়া কিয়দংশ দান করতঃ তোমাকে দুর্লভ মানব দেহ দান করিয়াছেন। তজ্জন্য গ্রন্থকারেরা লিখিয়াছেনঃ-
মায়ের চা'র, বাপের চা'র, গুরু দিয়া দশ।
আঠার মোকামের মধ্যে ফিরে মহারস।।
(মায়ের চারি- নখ, ত্বক, রোম, দন্ত।
বাপের চারি- অস্থি, মজ্জা, রক্ত, মাংস।)
{এই গুরু কোন গুরু? জগতগুরু শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাদঁ।}
মহা-মহাপ্রভুর শ্রীমুখের মহাবাক্য, জিতেন্দ্রিয়তা শক্তি লাভ করিতে পারিলে মাতৃ পিতৃ দেহ লইয়া অমরত্ব লাভ করা যায়। পাশব প্রবৃত্তি চরিতার্থ করিলে পিতৃধন ব্যয়িত হইয়া মায়ের চারি ও বাপের চারি অংশ দিনে দিনে লয়প্রাপ্ত হয়, অর্থাৎ মৃত্যু হয়।
অপিচ
জীবনং বিন্দুধারণং মরণং বিন্দুপাতেন।
তস্মাদতি প্রযত্নেন কুরুতে বিন্দুধারণাৎ।।
প্রত্যক্ষ দৈহিক প্রমাণঃ
জন্মমাত্র দেহ অতি ক্ষুদ্র থাকে। বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেহ বৃদ্ধি হইতে থাকে। দেহবৃদ্ধির পূর্ণমাত্র নরদেহ সার্দ্ধ ত্রিহস্থ পরিমিত। যতদিন দেহ দ্বারা সঙ্গম ক্রিয়া না করা হয়, ততদিনই দেহ বাড়িতে থাকে। ক্রমশঃ সাংসারিক হইয়া, অপত্য নির্বিশেষে দেহ ক্ষয়িত হইতে থাকে। কালে কেশ পক্ক হয়, দন্ত স্খলিত হয়, দেহাবরণ চর্ম দিন দিন বিবর্ণদশা প্রাপ্ত হইয়া দেহ কৃশ এবং লঘু হইতে থাকে। কালে কালে কটিদেশ কুব্জদশা প্রাপ্ত হয়। যে দেহ দ্বারা গুরুভার বহন হইত, সেই দেহ দ্বারা স্বীয় দেহভার বহন যষ্ঠীধারণ করিয়াও কষ্টবোধ হয়।