মতুয়া দর্শন
শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া সমাজ
মতুয়া মত সত্য পথ

গান নং ৭১~৮০

গান নং ৭১
মায়ের কোলে বসে আমি মাকে করি কোলে
মায়ের চরণ তলে বসে আমি সদানন্দে বলি হরি।
 
প্রাণের কোঠায় ঘর করেছি
শ্রীহরির শ্রীমূর্তি সেথায় গড়েছি
মাকে আমি সেই ঘরের দ্বারে দ্বারী করেছি
সেখানে যুগল পূজা করব আমি
এ আমার মনের বাসনা।
ঝড় উঠিলে হৃদ গগনে
মা বলে ডাকি তাঁর স্মরণে
ভঁয় করিলে কেন মনে মনে
শুধু হরি হরি বল রসনা।
মা আমায় ভাবের ঘরে দে উঠিয়ে
মনের ভাবনা অ-ভাবনা দে উড়িয়ে
একবার শ্রীহরির ওই শ্রীচরণ ধরি।
 
পাপীকে ত্বরাবি বলে পাপীর মুণ্ডে মালা পরিস
অভয় দিতে ভক্তজনে খড়গটা যে উঠিয়ে ধরিস
কান্না থামাতে সন্তানে তুই দু’হাতে কোলে করিস
মা তোর এ কেমন  করুণা।
 
গান নং ৭২
মুখের জবান গেলে কিছু থাকে না
মানুষ নামের খোলস পরলে
নামের ঘোরে ঘুরে মরলে
মানুষ হলে না।
 
অর্থ সম্পদ টাকা কড়ি 
যা কিছু তোমার বলে আছে
সব বিলিয়ে দাও
কেউ করবে না মানা
একটি কথা বলি শোন
কারো জামিন হইও না।
 
দুধ কলা দিয়ে সাপ পোষ
তাতে কোন ক্ষতি নেই
কিন্তু সাপের কাছে 
অমৃত চেও না
বিষ দেবে পেয়ালা ভরে
অমৃত পাবে না।
 
এটা তো নতুন কিছু নয়
চিরদিন এরকমই তো হয়
সবাই ভাল মুখে মুখে
এটা কথার কথা নয়
অধীন বৃন্দাবন ভাবে বসে অন্তরালে
বুঝি সে মানুষ ভাল না।
 
গান নং ৭৩
বুঝি আমার এ জনমে আর হল না, হরি সাধনা।
যতই করতে চাই নিষ্কাম প্রেম আরাধনা, মন তো বশে থাকে না।
 
আমি মূল কেটে ভাই জল দিয়েছি, গাছের গোড়াতে
নারীকে করে অকারণ অবহেলা, ফুল দিয়েছি মাটির পাষাণ মূর্তিতে
আমার সময় গেল ভুলে ভুলে, ভুল করতে
মন বাগিচায় তাই ভক্তি মুকুল, আজো ফুটল না।
 
টাকা পয়সার নাই কোন অভাব
আমার মনে ভক্তি ভাবের অভাব
ছোট বড়, মান অপমানে সমান ভাব, এ জনমে তা আর হল না।
 
তুমি ঘোরাও বলে ঘুরে বেড়াই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে
সঞ্চয় করি যা কিছু পাই সব তোমার ভাণ্ডে
জন্মাবধি ঘুরছি আমি আজো ঘুরি দণ্ডে দণ্ডে
দেখা দিয়ে শঙ্কা হর ভবের ঘোরে আর ঘুরাইওনা।
 
অধম বৃন্দাবনের কপাল খারাপ
করে না আমার শান্তি হরির প্রেম আলাপ
এবার সে আর পাবে না মাফ
ঘুচল না তার মরম বেদনা।
 
গান নং ৭৪
কেন ভুল করিলি ফুল নিতে মা
আমার সাঝি হতে
আমি অনেক সাধের ফুল তুলেছি
মনের কুঞ্জ হতে।
 
আমার মনের কুঞ্জে ছয়টি রঙের ফুল ফুটেছে
ফুলের ভারে ফুল শাঁখাটি নুয়ে পড়েছে
ফুলের গন্ধে মন ভ্রমরা আকুল হয়েছে
তোমার রাঙা চরণ পেতে।
 
আমার আর কিছু নাই তোরে দেব
(আমি) আমারে তোর হাতে তুলে দেব
মা তোর কোলের ছেলে আমি হব
এই (ভবে) আসা যাওয়ার পথে।
 
গান নং ৭৫
ওগো হরি, হরিরে, ওগো বিপদ ভঞ্জন হরি,
কামনার কামসাগরে পড়িয়া অথই নীরে
(আমি) ডাকি তোমারে দেহ অকুলে পাড়ি।
 
না মানিয়া তোমার বাণী বিপথে বিপদে পড়িয়াছি আমি
ওগো দয়াময় হরি, দয়া কর, দয়া কর
সুপথ দাও চিনিয়ে দয়া করি।
 
তুমি দিয়েছিলে অহং জ্ঞান তোমারে মানিনি তাই
আঘাত দিয়ে ভেঙ্গে দিলে আমার সে ভুল
এখন তোমার পথে যাই
ওগো করুণাময় হরি, করুণা কর, করুণা কর
দেহ চরণ তরী এ বিপদে যেন যাই তরি।
 
ভুল করে ভুল পথে পা দিয়েছি এ বিপদে তাই পড়েছি
ওগো দয়াল হরি, অসীম ক্ষমতা তব, অসীম ক্ষমতা তব
অপরাধ ক্ষমা কর, ক্ষমা কর, এখন শুধু তোমারে স্মরি।
 
গান নং ৭৬
একতাল আমার সই হল না কোনকালে
কারো জীবন চলে তালের ঘরে, কারো চলে শুধু বেতালে
আমার জীবন চলে তালে আর বেতালে।
 
সুরের সাথে তাল মিলিলে গান ভাল হয়
কথার সাথে তাল মিলিলে কাব্য হয়ে যায়
যার কথায় কাজে আর মনে মিল থাকে না
তার জীবন যায় বিফলে।
 
তালের ঘরে চলব বলে শপথ করি
আমি বারে বারে সেই শপথ ভেঙ্গে গড়ি
জানি তবু অজানা রয়, চিনি তবু অচেনা রয়
দেখি তবু দেখি না, স্বপন মাঝে ঘোড়ায় চড়ি
ভেঙ্গে গেলে মোহের স্বপন পড়ে রই সেই অকুলে।
 
মরম জ্বালায় জ্বলে মরি নিরাশাতে কি যে করি ভেবে না পাই
পরের বিচার করতে গিয়ে মরি আমি হোঁচট খেয়ে 
সদা চিন্তাকুপে ডুবে যাই
যার মনে নাই প্রেমের ধারা সে বেঁচে থাকতে হয় গো মরা
তার জীবন ডোবে অতল তলে।
 
গান নং ৭৭
তুমি সূর্য, আমি সূর্যমুখীসম
সারা দিবস ধরি তব মুখপানে নীরবে চাহিয়া থাকি
জানি তোমাতে আমাতে কভু হবে না মিলন
তাই দেবতা করিয়া রাখি।
 
বিরহ কত যে মধুর শুধু বিরহী তা জানে
যারে যাবে না পাওয়া, তারে চাওয়া কত যে আনন্দ
বুঝিবে না আনজনে
কাঁদি গো না তাই নীরব মৌন থাকি।
 
দিন শেষে একা কাঁদি পেয়ে হারাবার ভয়ে থাকি
বিরহীর মৌন বীণা একা একা বাজে
কেঁদে কেঁদে তার দেবতারে ডাকে
আমি একা শুধু প্রভাত সূর্যের আশায় থাকি।
 
গান নং ৭৮
(আমি) আমারে করিনু দান তোমারে
তুমি লহ, তুমি লহ, তুমি লহ আমারে
তোমার কর্ম করিব যতনে তুমি রহ মোর হৃদ চেতনে
আমি যাইব অগম পারে তোমার অভিসারে।
 
নিজের ঘরে (আমি) হইনু পরবাসী
বিদেশে অতিথিসম রইনু গৃহবাসী
সোনার খাঁচায় বন্দী পাখি ডাকে কাতর স্বরে
মুক্ত আকাশে উড়িবারে
তুমি লও গো তারে আপন করে।
 
আমার বলে কিছু না রয় যেন ভবে
হৃদয় মন প্রাণ জুড়ে তোমার নামটি শুধু রবে
নিঃস্ব জীবন পূর্ণ হবে তোমার পরশ পেয়ে
কাঙ্গাল যারা অসহায় যারা তোমার পথে
তাদের সাথে আমায় উঠিয়ে নিও তোমার রথে
যাব তোমার সাথে তোমার ভজন গেয়ে
পেছনে পড়ে যাই যদি ফেলে যেওনা আমারে।
 
গান নং ৭৯
তোমার অসীমে তোমার চরণ ধ্বনি
(আমি) আজি শুনি
তোমাতে আমায় করিয়া বিলীন
(আমি) তোমার বাণী শুনি।
 
কার জমিতে করি দখলদারী
আমি কার হুকুমে করি জমিদারী
আমার শূন্য  থলি শূন্য থাকে
মিছেই প্রমাদ গুনি।
 
নিজেরে করিনু ভিখারি
দ্বারে দ্বারে নিত্য ঘুরি
দয়া করুণা ভিক্ষা মাগি
হৃদয় গভীরে শুনি কান্নার ধ্বনি।
 
তোমার অসীম আকাশে
কত তারা-শশী হাসে
একটি খসে গেলে কি ক্ষতি তোমার
তবু তারে রেখেছ ধরি
পরম আদর করি
যেন অপরিমেয় স্নেহের আধার
তোমার লাগি তাই আজি
কাঁদে নিখিল ধরণী।
 
গান নং ৮০
ওগো দয়াময় হরি
তোমার অধীন আছে যারা
তাদের হতে নাই কো আমার ভয়
আমার সকল কর্ম, সকল ভার
আমি দিলাম তোমায়।
 
প্রভু, যে নিয়াছে তোমার স্মরণ
তার জীবন মরণ সকল সমান
দমন পীড়ন, মান অপমানে
ভয় কি তার
তুমি যার হও গো সহায়।
 
প্রভু, তোমার প্রকাশ আমার মাঝে
তোমার বাণী নিত্য নূতন সুরে বাজে
আমার সকল কাজের মাঝে
তুমি নিত্য রসময়।
 
প্রভু, তুমি নিয়ে আমার সকল দায়
আমারে করেছ নির্ভার
যা দেখি যা পাই সবই  তোমার
কিছু নাই কো আপনার
অভাব কিছু নাই কো আমার
কোন অমানিশায়।
 

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুরের আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন। হরিবোল।
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free