মতুয়া দর্শন
শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া সমাজ
মতুয়া মত সত্য পথ

গান নং ৮১~৯০

গান নং ৮১
তুই বল মা আমার কি দোষ পেলি
ঘর থেকে কেন বের করে মা
পথে আমায় নামালি?
দোষ যদি মুই করে থাকি
সেও তো জানি তুই করালি।
 
রাম প্রসাদের মা হলি তুই
তারকচাঁদের মেয়ে
আবার বামা ক্ষেপার মা হলি তুই?
আমায় কেন বা নিদয় হলি?
 
তোর কর্ম তুই করাস মা
দোষের ভাগী কেন মা হই
চিন্তা যদি দিলি মা  তুই
দে মা তোর পদচিন্তা
পাষাণ বক্ষে কেমনে মা তুই
দয়াময়ী নাম ধরিলি?
 
গান নং ৮২
ওগো মা, শান্তি মা
বসো মাগো মূলাধারে, স্বাধিষ্ঠান চক্রদ্বারে,
কামেতে ডুবাস না রে, প্রেমাস্পদে প্রেম কর দান।
 
কামিনিরে ভোগিবারে, লোভে কত লোক মরে,
ফেলিস না সে ফাঁপরে, গাই  মা তোরই জয়গান।
 
প্রকৃতির মোহে পড়ে, কিংবা নিজ দোষ ভরে,
ধর্মাধর্ম মূল ছেড়ে, করি আমি নিজ অপমান।
 
সংসারের রঙ্গ মাঝে, কত রঙ্গ বিরাজেছে,
ভুলে ভরা সঙ্গ আছে, তাই মোর মুখে হাসি ম্লান।
 
বাহ্য চক্ষু অন্ধকারে, জ্ঞান চক্ষু খুলে দেরে,
যেন চক্ষে দেখি নারে, মা তোর বিকৃত অবদান।
 
গান নং ৮৩
আমি জানি প্রভু ঠিকই জানি
তোমার কর্ম যখন শেষ হবে গো
তোমার কাছে লবে (আমায়) টানি।
 
আমার পাপের ভরা পূর্ণ হবে
পুণ্যের ঢালি শূন্য রবে
পথের শেষে পথ না রবে
তখন তোমার বাণী আসবে নামি।
 
তুমি সত্য, তোমার প্রেম সত্য
এই সত্য জানি
আমি সত্য, তোমার সৃষ্টি সত্য
তোমার প্রেমে জানি
ওহে জীবন বল্লভ তাই,
আমার দুঃখ ভয় নাই
সময় হলে তোমার প্রেম
প্রেমাস্পদে দেবে আনি।
 
তুমি রত্নাকরে উদ্ধারিলে রাম নামের গুণে
তুমি রামদাসে করলে সাধু সাধুসঙ্গ গুণে
অধম তারিতে তুমি এলে হরিচাঁদ
বৃন্দাবনের জীবন ভরা শুধু অপরাধ
তোমার নামগুণে নিজ গুণে
লও গো তারে কাছে টানি।
 
গান নং ৮৪
হরি, ভক্তি বাতি মনির আলো
দাও না প্রভু জ্বেলে আমার অন্ধকার ঘরে
তুচ্ছ অর্থ স্বর্গ মুক্তি চাই না আমি ওগুলো
তুমি নাও না আমায় ঐ শ্রীচরণের দাস করে।
 
অনেক চেষ্টা আর সাধনা করে
জ্ঞানের বাতি জ্বেলেছিলাম আমার আঁধার ঘরে
কাম নদীর এক তুফান এসে নিভিয়ে দিয়ে গেল
আবার আঁধার করে
প্রভু, দাও আমারে এমন কিছু
রয় যেন তা ঝড় তুফান আর মোহের ঘোরে।
 
তুমি দেখা দাও বা না দাও চিন্তা করি না কো
তুমি আমায় দেখছ সদায় চোখের সামনে রাখো
আমি যদি বা নাই বা ডাকি তুমি আমারে ডাকো
পাপের ভয়ে তাই তো আমি আর কভু ডরিনারে।
 
গান নং ৮৫
যেওনা যেওনা হরি একটু দাড়াও
ও কোমল পদে কোমল ফুটিয়াছে
নয়ন ভরিয়া হেরি।
 
যবে পদ ধুলি পরে দাও 
(তব) পদপাশে কোমল শোভা হয়
উঠাইলে পদ সে শোভা (তব) পদে মিলিয়া যায়
উঠাইওনা উঠাইওনা পদ উঠাইওনা
নয়ন ভরি কোমলের কোমল পদ সেবা হেরি।
 
সেই দিন সেজেছিলে কস্তূরী কুসুম ফুলে
সাজাল রাখাল সবে রত্নডাঙ্গার বিলের কূলে
আজ কে সাজাল নিভৃত এই বিজনে
হেরি একা নয়নে অনুভবি হিয়া ভরি।
 
গান নং ৮৬
আমি চিরদিন যাচিনু যারে 
হৃদয়ে সবের অন্তরালে
সে এসে ফিরে গেল নীরবে
কি আছে আমার ভালে।
কেন ঘুম ভাঙিল না
যখন সে এল দ্বারে
বিমুখ হয়ে সে গেল ফিরে
আর না ফিরিবে কোন কালে।
 
একবার ডেকেছিল সে আমারে
আমি দেইনি তখন সাড়া
একেলা চলেছে পথ বন্ধুর পথে
দুঃখ বেদনায় কভু হয়নি দিশাহারা
আমি ডেকেছিনু তাই এসেছিল
ফিরে গেল আমার অবহেলায়
আর না ফিরিবে ফিরালে।
 
মুক্ত সে চিরমুক্ত পথিক
কোন বাঁধন বাঁধেনি তারে কভু
মোহ আর ভুলের মাঝে চলেছে নিরবধি
ভুল করেনি সে ভুলেও তবু
আর চাহিব না বাঁধিতে তারে মায়ার বাঁধনে
আমি রব তার ছায়া সম
সে চলে গেছে যে পথে সে কালে।
 
গান নং ৮৭
প্রভু, এখানে তোমারে চায় না কেহ
চায় শুধু তোমারই ঐশ্বর্য
একি মোহ! প্রভু, একি মোহ!
 
এখানে কেহ গাঁথে না ফুলের মালা তোমার কণ্ঠে দিতে
বরমাল্যখানি নিজেই পরে পারে না সে ভার সহিতে
পারে না বুঝিতে সকল কাজে সকল ফলে 
সর্বস্থলে তুমি রহ।
 
এখানে কেহ পারে না শুনিতে আপন মনের কথা
ভ্রমে চঞ্চল হিয়া ভরি ভ্রমে না সত্য সুপথ যথা
চাহে না কেহ আপন বিবেক পানে 
শোনে না সেথায় তুমি কি কথা কহ।
 
এখানে পারে না কেহ আপন ভার বহিতে
ক্লান্ত চরণ অশান্ত মন পারে না হৃদয় ব্যাথা সহিতে
প্রভু, যে দিয়াছে তোমায় ভার তারে তুমি কর নির্ভার
বোঝে না কেহ আপনি স্ময়ং তার সে ভার বহ।
 
গান নং ৮৮
মায়ের কাছে যাব আমি
মা আমারে ডাকল না
মাকে ডাকি মা মা বলে
মা আমারে নিল না।
 
উগ্রমূর্তি ধরে মা ভয় দেখাচ্ছে আমারে
যতই ডাকি মা মা বলে
সৌম্য শান্ত মূর্তি ধরে না।
 
কোলে নেবার ভয়ে মা হাত রাখে না খালি
দশ হাতে তার দশ অস্ত্র সামনে পূজার ঢালি
আমায় ভুখা রেখে মায়ের খেতে 
একটুও তো বাধে না।
 
দুর্গতি নাশিনী আমার মাকে সবাই বলে
নিজের ছেলে বলে আমায় বিপদ মাঝে ফেলে
কোলে নিলে শংকা যাবে
এ ভেবে আর মা’র চরণে ভার দেব না।
 
মা আমার ভোগের ঘরে বন্দী আছে
আমার সাধ্য নাই থালা ভরে খেতে দেব
চোখের জল দেখে মায়ের চোখে তো
আর জলে ভরে না।
 
গান নং ৮৯
একটু দুঃখ পেয়ে মনটা তোমার ভাঙল কেন
এমন তো নয় দুঃখটি সারাজীবন রয়েই যাবে।
আকাশে মেঘের আভায় না হয় একটু বৃষ্টি হল
এমন কেন ভাবলে তুমি মেঘটা ঝড় হয়ে বয়েই যাবে।
 
এত অল্প ব্যর্থতায় কেন এত অধীর হলে
এখন তো সময় আছে
রাজার ভাণ্ডারে অর্থের অভাব হলে
শনির বারতা সেথায় যাচে
একবার বিফল হয়ে ভাবলে কেন
বিফলতায় জীবনটা ভরেই রবে।
 
এতটুকু কষ্ট পেয়ে কাঁদলে কেন
মিছে তোমার  চোখের জল ঝরল কেন
ব্যথার ব্যথী যেজন তোমার তাকে ভুল বুঝলে কেন
ছেড়ে দিয়ে ব্যর্থ ভাবনা যা আছে তোমার কাছে
তাই দিয়ে জীবন চালাও 
ছেড়ে দিয়ে তর্ক তুলনা সবারে পরম সত্য জানাও
তোমার আনন্দময় ক্ষণে জীবনটাই ভরে রবে।
 
গান নং ৯০
মায়ের পূজা করব  আমি কি দিয়ে
কি আছে আমার
ভক্তি বাড়ি পাত্র শূন্য মোহ আর অহংকারে ভরা
দুহাত ভরে তাই নীল কোমল করে
দিই ঐ চরণে তোমার।
 
মা সে আমার মা দাঁড়ায়ে আছে দুহাত তুলে
আমায় কোলে করবে বলে
আমি তার দুষ্ট ছেলে যাই না আমি সকল ফেলে
তবুও মা আমারে ডাকে বারে বার।
 

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুরের আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন। হরিবোল।
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free