মহা-মহাপ্রভুর সপ্তম আজ্ঞাঃ (গদ্য)
মহা-মহাপ্রভুর সপ্তম আজ্ঞাঃ
কাহারও ধর্ম নিন্দা করিও না।
যে ব্যক্তি স্বীয় ধর্ম অমান্য করে, সেজন পরধর্মও নিন্দা করে। ধর্ম বলিতে একটি কথা, যে কোন ধর্ম হোক, যাহারা ধর্মের পরিব্রাজক তাঁহারা কেহই বলেন নাই যে, মিথ্যা কথা বল, চুরি কর, পরদার গমন কর, অসৎ কর্মে লিপ্ত হও। সকল ধর্মের সারভাগ হিতোপদেশ। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ব্রাহ্ম, জৈন যে কোন ধর্ম হোক সকল ধর্মের সদুপদেশ দিয়াছে। দধি মন্থন করিলে যেমন ঘৃতোৎপাদন হয়, তদ্রূপ সর্বধর্ম মন্থন করিলেও সারভাগ অতি মধুর। তবে এক কথা, সকল ধর্মে, সকল জাতিতে অধর্মচারী লোক আছে। তাই বলিয়া ধর্ম নিন্দনীয় নহে, ধার্মিক লোক জগতে সকলের নিকট, সকল জাতির নিকট, সকল ধর্মাবলম্বীর নিকট আদরণীয়। সাক্ষী ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত গোপালগঞ্জ নিবাসী রেভারেন্ড মথুরানাথ বসু, কুলীনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কুলীন ছিলেন। তিনি জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের অন্ন গ্রহণ করিতেন। অথচ দেশবাসী সকলেই তাহার নিকট মস্তক অবনত করিত। আরো সাক্ষী ডাক্তার সি.এস. মিড। তিনিও ধর্মানুরোধে সাত সমুদ্র তের নদী পার হইয়া অর্থাৎ অষ্ট্রেলিয়া ত্যাগ করিয়া বাংলাদেশে (ওড়াকান্দি) আসিয়া পরোপকারের মহাব্রতে ব্রতি হইয়াছিলেন এবং উন্নতির সর্ব শিখরে আরোহন করতঃ সকলের পূজ্য হইয়াছিলেন। বর্তমান সময় সর্বপ্রধান সাক্ষ্য শ্রীশ্রীধাম ওড়াকান্দি নিবাসী মহাপ্রভু মুক্তিবারিধী শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর। ব্রাহ্মণ, বৈষ্ণব, কায়স্থ, মুসলমান, প্রভৃতি জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে তাঁহার নিকট অবনত মস্তকে সাষ্টাঙ্গে প্রণিপান্তর যাঁহার প্রসাদান্ন প্রার্থী অথচ দুষ্প্রাপ্য এবং যাহার পদরজ না পাইয়া মাত্র কীর্তনের ধুলি লইয়া কৃতার্থন্মন্য হইতেছেন। সুতরাং পরধর্ম নিন্দনীয় নহে।