মতুয়া দর্শন
শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া সমাজ
মতুয়া মত সত্য পথ

গান নং ১৩৬-১৫১ (শেষ)

১৩৬ নং গান - তাল গড়খেমটা

          যেন উছটি খেয়ে পড়িসনা তুই তেমাথা পথে।

          কত যোগী ঋষি যাচ্ছে পড়ে ঐখানে যাওয়ার সাথে।

১।       ঐ পথে চলা ভীষণ দায়, সেখানে আছে বাঘের ভয়,

          তাজা মানুষ খায়না বাঘে, মরা মানুষ খায়

          কত চেতন মানুষ ভয় পেয়ে যায়, তারা বেঁচে যায় কোন মতে।।

২।       ঐ পথে দিয়ে কত জন তাদের হয়েছে মরণ,

          তাই শুনে ভাই কতজনে করে যোগ সাধন।

          তাঁরা গুরুর কৃপা পেয়ে তখন, পার হয় গুরুর কৃপাতে।

 ৩।     সেই রাস্তার গর্তের ভিতরে, দুরান্ত শার্দ্দুল বাস করে।

          আকর্ষণে নিচ্ছে টেনে বুঝতে না পরে

          এদিন বিনোদ বলে সুজন ধরে, সেখানে হয় পার হতে।।

 

১৩৭ নং গান - তাল গড়খেমটা

          সবাই চায় সাধু হতে।

          ষড় রিপু বসি থাকে না, ঠেকা কেবল ঐ জাগাতে।

১।       কত ভাবে কত জনে সাধু হতে চায়,

          আসল জায়গায় খোঁজ পড়ে না করে হায় হায়!

          যেমন পতঙ্গের তেল হলে ভাই, পুড়ে মরে প্রদীপেতে।

২।       গুটি পোকা কৰ্ম্মেদোষে নিজের জালে হয় বন্দি,

          অন্ধকারে ঘুরে মরে এড়াতে না পায় সন্ধি।

          যেমন ঠগা কলে বগা বাঁধে ভাই ফাঁসি পড়ে তার গলেতে।

৩।      মুখেতে সাধু ভারী কত জন দেখি,

          অন্তরে শয়তানী ভরা কর্ম্মেতে ফাঁকি।

          রিপুর বসে মরে শেষে, কাম নদীর ঐ গোলাতে।

৪।       বিনোদ বলে রিপু জয়ী যে জন এধরায়,

          তাঁর চরণে কোটি প্রণাম করি সব সময়

          তাঁর স্থান ভাই সবার উপরে যে আসক্তি নাই রিপুতে।।

 

১৩৮ নং গান- তাল গড়খেমটা

          হুঁশিয়ার মন আমার ঢাকার শহরে

          তথায় ফেরী ঘাটে পকেট কাটে দিনে দুপুরে ছয় চোরে

১।       আজগুবি সেই ঢাকা শহর, প্রচণ্ড কামের লহোর,

          সেই শহরে সাধু আর চোর, এক ঘরে বাস করে।

          তথায় চুরি করে পালায় চোর, সাধুযায় কারাগারে।

২।       সেই শহরের খবর পেয়ে , কতজন চলছে ধেয়ে,

          নুতন নুতন দোকান দিয়ে, বেচা কেনা করে।

          শেষে লাভে মুলে খোয়াইয়ে, মরতেছে মাথা খুড়ে।

৩।      বিনোদ বলে রসিক যাঁরা, সেই শহরে গিয়ে তাঁরা,

          বুঝে সেই ব্যবসায় ধারা, লোকসান দেয়’ত নারে,

          তারা উজান গায়ের সুজন হয়ে, মাল জোগায় গুদাম ঘরে।।

 

১৩৯ নং গান - তাল একতাল

          তোমার নাম নিয়ে রয়েছি বসে দয়াল যা করি আমারে।

          আমি অগ্য অসৌভাগ্য পরে আছি এ সংসারে।

১।       কি করিব কোথা যাব, কার কাছেতে প্ৰাণ জুড়াব, কবে তোমায় পাব।

          আমার ত্রিতাপ জ্বালা জুড়াই, পেয়ে দয়াল তোমারে।

২।       আশায় আশায় জনম গেল, দুই চোখ অন্ধ হল,এখন উপায় বল।

          আমার সাথের সাখী যাঁরা ছিল, আমায় গেল ছেড়ে।।

৩।      এ জীবনে শুনলাম শুধু, সব কর দিনবন্ধু, পার কর ভবাসিন্ধ

          বিনোদ পায় না তার এক বিন্দু, কাঁদে বসে আঁধারে।

 

১৪০ নং গান – তাল একতালা

          বসে ভাবিছ কিরে অবুঝ মন ভাব ভাবার মতন।

          তাঁর ভাবের সাথে ভাব মিশিয়ে, সঁপে দাওগে দেহ মন।

১।       দোকানদারে নিক্তি ধরে, দিচ্ছে মাল ওজন করে, বিচার অনুসারে

          তেমনি মন বিক্রি হয় মনের দরে, ভাবি সনে ভাবের ওজন।।

২।       ভক্তি ফুল আর নয়ন জলে ,ডাক তাঁরে হৃদয় খুলে, দীনবন্ধু বলে।

          ও তার ভাব সাগরে ডুবে গেলে, দেখবি রে যুগল চরণ।

৩।      বিনোদ বলে মনরে ভোলা, দেখবি কত মায়ার খেলা, চেয়ে দেখ ডুবল বেলা

          হবে না তোর পথে চলা, সময় থাকতে করা স্মরণ।।

 

১৪১ নং গান- তালঃ গড়খেমটা

ভাষা দিয়ে ভালোবাসা বুঝান কি যায়,

সজনী রে কি যাতনা বিরহ ব্যাথায়

          কথায় কি আর ব্যাথা সারে দুধের তৃষ্ণা ঘোলে কি মিটায়

১।       অরূপে রূপের ছবি কল্পনায় আঁকি,

          বুকের মাঝে লুকাইয়ে চোখ বুজে দেখি

          সে আমারে দিয়ে ফাঁকি গিয়াছে কোথায়।।

২।       সে আর আমি একদিন ছিলাম মিলন বাসরে,

          কত ভাল বাসত আমায় আলো আঁধারে

          দশমাস পরে গেছে ছেড়ে, সে কোন অজানায়।।

৩।      বিনোদ বলে পরাণ বন্ধু অন্য আশা নাই,

          মরে যেন পর জন্মে তোমার দেখা পাই

          শ্ৰীচরণে লাগে দোহাই ফেলিও না পায়।।

 

১৪২নং গান - তাল গড়খেমটা

          কলিতে দেখলেম লীলা চমৎকার

১।       উল্টে গেছে দেশের হাওয়া সবার মাঝারে,

          মেয়ে লোকের আড্ডা দেখি টাউন বাজারে।

          রাজার ছেলে হইছে ফকির ফকির হইয়াছে রাজ্যেশ্বর।।

২।       মানী লোকের মান কমেছে দেখতে পেলাম তাই,

          অমানুষের গায়ের জোরে বাঁচার কায়দায় নাই

          দেখে শুনে কোথায় পালাই, বল বুদ্ধির সব চুলার পর।

৩।      কই মাছ আর রুই মাগুরের নাইকো মান,

          বাজারেতে পড়ে গেছে চিংড়িমাছ আর ব্যাঙের টান।

          এ দীন বিনোদ বলে কলি কালে কি যেন হয় ইহার পর।

 

১৪৩ নং গান - তাল ঠুংরী

          হারে ওপারের মাঝিরে তুমি আর কত কাঁদাবে আমারে।

          আমি এ পার বসে কাঁদি দয়াল তুমি থাক ঐ পারে।

১।       জন্মাবধি মায়ানদী দয়াল সম্মুখের পরে।

          আমি ভাবি নিরবধি, এমায়া নদী, কেমন করে যাই পারে।।

২।       তোমারি আদেশে, আসিয়া বিদেশে ঘর বাঁধিলাম মায়াপুরে।

          আমার সে ঘরে যা ছিল, চোরেতে হরিল, দেউলে হয়ে বেড়াই ঘুরে।

৩।      ষোল আনা দিয়ে, দিয়েছ পাঠায়ে, ব্যাপার করিবার তরে।

          আমার ব্যাপার না হলো, চালান ফুরাল ছয়জনার পাল্লায় পড়ে।

৪।       অসময় দেখিয়া গিয়াছে ছাড়িয়া আপন কইত যারা মোরে।

          দয়াল তুমি বিনে আর কেহ আমার, বিনোদ ভাসে আঁখী নীরে।

 

দুইটি ইসলামী গান

১৪৪ নং গান – তাল ঠুংরী

          মন পাখী তুই যারে উড়ে সোনার মদিনায়।

          গেলে তাপিত অঙ্গ শীতল হবে, নবীজীর রওজায়।।

১।       রওজার গুণ আর বলব কত , দুঃখী তাপি ছিল যত।

          সেথায় হবে সবে মাথা নত, ফুলছরাতে তবে যায়।।

২।       হাসানকে বিষ খাওয়ালো , বিষে অঙ্গ জ্বলে গেল।

          বিষের জ্বালায় তুচ্ছ হলো, রাসুলের হাওয়া লেগে গায়।।

৩।      নবীজীর ত্যাগের বাণী তরাইবে সকল প্রাণী।

          জামিন্দার হয়ে তিনি, বসে আছে পারঘাটায়।।

৪।       রওজাতে দীনের নবী , আজও আছে তাঁর সুরে ছবি।

          বিনোদ বলে দেখতে পাবি, যদি নবীর কৃপা হয়।।

 

১৪৫ নং গান - তাল ঠুংরী

          কি যেন কি আল্লার ইশারায় দুরন্ত ছায়া নামল কারবালায়

          এই কি আল্লা লিখে ছিল হোসেনের অস্তিম শয্যায়

১।       ফুরাত নদী পানি বিনে কেউতা আর বাঁচেনা প্রাণে

          এজীদের সৈন্য গণে, ঘিরে আছে সব জায়গায়।।

২।       এজীদের সৈন্য যারা যুদ্ধেতে হইল খাড়া

          সখিনার কপাল পোড়া বিয়ের রাতে স্বামী হারায়

৩।      হোসেন যায় যোদ্ধার বেসে, কত সৈন্য মারল শেষএ।

          দূরান্ত সীমার এসে তাঁর গলে খঞ্জন চালায়।।

৪।       কারবালার লতায় পাতায় , হায় হোসেন হায় হোসেন কয়।

          বিনোদ বলে আজও সেথায় , হায় হোসেন শব্দ শোনা যায়।।

 

১৪৫ নং গান – তাল গড়খেমটা

          আমি আশা নদীর কূলে বসেরে দয়াল আমার গোনা দিন ফুরায়ে যায়,

          তোমার ডাকার হলো সময়।।

১।       দুর্ল্লভ জনম পেয়ে তোমার না করলেম সাধন,

          কুপথে মন মজায়ে সদায় করি বিচরণ

          হয়ে আপন ভোলা মায়ার খেলা রে দয়াল খেললেম এসে দুনিয়ায়।।

২।       আসবার সময় কৃপা করে নিল রে সম্বল,

          অবিচারে সব খোয়ায়ে হয়েছি দুর্ব্বল।

          এখন খালি হাতে পথে পথে রে , দয়াল ঘুরিয়া বেড়াই সদায়।।

৩।      মানব জনম পেয়ে হয় মোর পশুর স্বভাব,

          তোমার কাছে দীনবন্ধু কি দিব জবাব।

          অধম কাৰ্ত্তিকের আর নাই বলিবার রে, দয়াল যদি নিজ গুণে কৃপা হয়।।

 

১৪৭ নং গান - তাল ঠুংরী

          ভবে এসে রে ও তুই ভুলে রলি আপনি জন ওরে মন

 ১।      যাঁর ইশারায় ভবে আলি, তাহারে তুই ভুলে রলি

          মায়া জালে বন্দি হলি, পেয়ে পুত্র পরিজন।

২।       ভব নদী দিতে পাড়ি ও মনরে এক পাই পাড়ের কড়ি

          ও তোর ধন ঐশ্বৰ্য্য পাকা বাড়ী সঙ্গে যাবে না কখন।।

৩।      পুত্র কন্যার সাজয়ে মেলা, ও মনরে খেলছে তুলছে মিছে খেলা

          ও তোর ডুবে এল জীবন বেলা, হয়ে র’লি অচেতন।

৪।       গুরুর পরে হইবে নতি, ও মনরে জীবের পরে রাখ প্রীতি

          কীৰ্ত্তিক রে তুই জগত পতি, তবে পাবি অন্বেষণ।

 

১৪৮ নং গান - তাল ঠুংরী

          ধরা পড়িয়াছি এসে এই দুনিয়ায় ওগো দয়াময়

১।       শিশুকাল গেল মোর চলে, ও দয়াল হেসে খেলে মায়ের কোলে

          যৌবন কাল মোর উদয় হলো, কালের ইশারায়

২।       যখন এলো যৌবন জোয়ার গায়, ও দয়াল দিন কেটে যায় যৌবন দোলায়

          মন বসে না তোমার চিন্তায়, করি কি উপায়।।

৩।      মধ্যকাল যখন এল , চারি দিকে বিল জজ্ঞাল

          পুত্র কন্যার মায়া জালে বন্দিল আমায়।।

৪।       বৃদ্ধ কালে রোগের’ই পীড়ন ও দয়াল তোমার কথা হয় না স্মরণ।

          অধম কাৰ্ত্তিক মাগে অভয় চরণ নিদানের সময়।।

 

১৪৯ নং গান - তাল ঠুংরী

          ছিলে বা কোথায়, আসিলে হেথায় আবার কোথায় যেতে হবে ( ও মন রে)

১।       পূর্ব পুরুষ যারা এল, একে একে একে সবাই গে’ল,

          তোমার পালা এস প’ল এবারে

          শুনরে মন ভাই আজ বুঝি সময় নাই,

          কোন দিন যেন চলে যেতে হবে।

      করিয়ে দুরন্তু আশা, বাঁধিল লালসায় বাসা

          বাসা কালের স্রোতে ভেসে যাব রে,

          বিচার করে দেখ মনে ,উপায় নাই গুরু বিনে,

          যেদিন ভব নদীর কূলে যাবে রে।

৩।      যাদের ভালবাসায় ভুলে, দেহকে বিসর্জন দিলে,

          ভুল হ’ল তোর পরকে ভাল বেসে রে।

          একা একা আইছ ভবে একা একা যেতে হবে,

          শেষের দিনে সঙ্গে কেউ না যাবে।

৪।       পত্ৰ দিল তিন খানা, তবুও হুঁশিয়ার হলি না।

          তাঁর কাছেতে জবাব দিতে হবে রে,

          কাৰ্ত্তিক রে তুই করে হেলা, জপলিনা’রে নামের মেলা,

সময় গেলে আর না সময় হবে।

 

১৫০ নং গান – তাল ঠুংরী

          আমি কেমন করে যাব পারে রে দয়াল আমি ভখে দুরাশয়

          অভাগারে ঘুচাও পারের দায়।।

১।       ষোলো আনা চালান দিয়ে ভাবে পাঠালে,

          রংবাজারে সব খোয়ালাম মায়ার কবলে।

          এখন দিশেহারা ডাকি তোমায় রে, দয়াল হয়ে বড় অসহায়।।

২।       যাদের পারের সম্বল আছে তাদের কর পার,

          পার ঘাটাতে হও যে তুমি পারের কর্ণধার।

          আমি সম্বল হারা কপাল পোড়া রে, দয়াল আমার হবে কোন উপায়।।

৩।      পুত্র কন্যা এসব শুধুমায়ার খেলাতে,

          তুমি ছাড়া কেহ নাই মোর আপনি বলিতে।

          অধম কাৰ্ত্তিক বলে চরন তলে রে, দয়াল যেন শেষে দিনে জায়গা হয়।।

 

১৫১ নং গান - তালা একতালা

          একখানা মানিক হারিয়ে গেছেরে বিজয় কৃষ্ণ কবি সুধা কর।

          এমন কবি হয় কিনা হয় বাংলা মায়ের বুকের পর।

১।       কি সুমধুর গেয়ে গেছে পোষ পাখির গান,

          স্ত্রী শোকে বুকের মাঝে দিয়ে গেছে স্থান।

          সেই গানে আজ হিন্দু মুসলমান কাঁদিছে সবার অন্তর।

২।       মধুমাখা কাব্যের ধারা গাইত আসরে,

          বিরহীনীর মনের কথা তার গানের সুরে।

          সেই মানুষ আজ গেছে ছেড়ে, ত্যাগ করে এই বাড়ী ঘর।

৩।      ধরার বুকে ফুটে ছিল সুগন্ধ কুসুম,

          সুগন্ধ ছড়ায়ে দিয়ে পড়ল মহা ঘুম

          ও তার ভাব জগতের কাব্য কুসুম, ফুটে রইল ধরার পর।।

৪।       বিনোদ বলে পাগল বিজয় প্রণাম রইল পায়,

          আমার একদিন যেতে হবে তোমার ঐ জায়গায়

          সেদিন দেখা হবে তোমার আমার, ভাল বাসার বাধব ঘর।


শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুরের আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন। হরিবোল।
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free