মতুয়া দর্শন
শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া সমাজ
মতুয়া মত সত্য পথ

মহা-মহাপ্রভুর অষ্টম আজ্ঞাঃ (গদ্য)

মহা-মহাপ্রভুর অষ্টম আজ্ঞাঃ

বহিরঙ্গে সাধুসাজ ত্যাগ কর।

মন সাধু না হইলে সাজিয়া কি সাধু হওয়া যায়? বাহিরে সাধুসাজে সুসজ্জিত মুখে ধর্মকথা মধুর ন্যায় বর্ষণ হয় অথচ ভিতরে চাতুর্য, কপটতা, ধৃষ্টতা ও পরশ্রীকাতরতা পরিপূর্ণ, এমন সাধু সাজ নয়। (বিষকুম্ভ পয়োমুখং)। বাহিরে মালা, তিলক, ডোরক কৌপিন, হাতে কমণ্ডুলু, মুখে রাধাকৃষ্ণ, কক্ষে ভিক্ষার ঝোলা, গায় নামাবলী এইরূপ বৈষ্ণব সাজে সুসজ্জিত হইয়া সাধুপোযুক্ত কার্য নাই, ইহাই বাহ্য সাধুসাজ, শুধু সাজ পরিয়া সাজের অপমান কর কেন? তিনবেলা স্নান করিলে কি সাধু হয়? "সাজ পর ত কাজ কর"। প্রবাদ আছে, কাজ করিলে কাজী, না করিলে পাজি।

কবি রসরাজ মহাশয় লিখিয়াছেন,
তিনবেলা স্নান করে কে হয় বৈরাগী?
স্নান করে পানকৌড়ি, সেও কি বৈরাগী?
গঙ্গাজলে স্নান শুধু উপরেতে ধোয়া।
আত্মা শুদ্ধ না হ'লে কি যায় তারে পাওয়া।

আরো লিখিয়াছেন -
বৈষ্ণব ধরম, তাঁহার মরম, জানিতে পারে কি সবে।
যাঁহার উপরে, হরি দয়া করে, সেই সে কিঞ্চিত পাবে।।
তৃণ নীচ হ'লে, যদি হরি মিলে, মৃত্তিকাতে যারা চরে।
ঘুঘুরা, কেচুয়া,তৃণের নীচুয়া, যাবে নাকি ব্রজপুরে।।
তাহার কারণ, জানে জ্ঞানীজন, জ্ঞানের উদয় হলে।
কৃষ্ণেতে ভকতি, হইলে এমতি, তবে ব্রজগতি মিলে।।
মোটা মালা গলে, তিলক ধরিলে, তাতে যদি হরি পায়।
গৌরাঙ্গ লীলায়, তিলক মালায়, সাজিল গর্দ্দভ কায়।।
বিচার করিয়া, দেখেন স্মরিয়া, এমনি যে কাজ কাজে।
সেই সে গাধায়, ভেকাশ্রিত হয়, সে কি যাইবে ব্রজে।।
ভাবের উদয়, 'য়ে যাহা রয়, ভেকাশ্রিত হরি ভজে।
মন বাঁধে ক'সে, কপ্নি এঁটে বসে, তবে সে যাইবে ব্রজে।।
গঙ্গায় ডুবিলে, যদি হরি মিলে, মীন না থাকিত জলে।
বিশ্বাস হইলে, গোক্ষুরের জলে, গঙ্গা নারায়ণ মিলে।।
নিষ্কাম হইলে, যদি হরি মিলে, বলদ রহিত ভাব?
হইয়া নিষ্কামী, কামে হবে কামী, তবে সে সেধামে যাবে।।
মুখে রেখে দাড়ি, যদি পায় হরি, ছাগ না থাকিত দেশে।
সাধনে তৎপর, নাহি অবসর, দাড়ি রাখে বিনা হুশে।।
মুখে মুখে খেলে, যদি হরি মিলে, কাক না থাকিত দেশে।
ধরম জানিবে, যে জন ভজিবে, সে জন বুঝিবে শেষে।।
নিরিখ ধরিয়া, থাকিলে চাহিয়া, তাতে যদি হরি পায়।
বক-বকী গণ, যেত বৃন্দাবন, কেন মৎস ধরি খায়।।
আরোপ সাধন, জেনে ত্রিলোচন, উরধ নয়ন তার।
তেমনি সাধন, করে যেই জন, সে হয় বেদের পার।।
সহজ করণ, নিগুঢ় গোপন, জঘন ঘনদ খায়।
যত বৃষ গণ, সুরভী জঘন, ঘনদ যে আস্বাদয়।।
কুকুরে শুকরে, কুভক্ষিয়া ফেরে, ময়ুরে ভক্ষয় বীর্য।
জলৌকা মশায়, রুধির আস্বাদয়, এদের হবে কি কার্য।।
প্রকৃতি হইয়া, ভজন করিয়া, কিশোরী ভজন করে।
শ্রীগুরু কৃপায়, গোপীভাব হয়, পায় শ্রীমতি রাধারে।।
গুরু মৃত্যুঞ্জয়, তারকেরে কয়, গুরুকৃপা সব দেশে।
যা কহিয়া গেলি, তার কি করিলি, মরিলি আপন দোষে।।


শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুরের আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন। হরিবোল।
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free