মতুয়া দর্শন
শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া সমাজ
মতুয়া মত সত্য পথ

মতুয়াদের অমীমাংসিত সমস্যা ও আমার প্রস্তাবিত সমাধান (সবগুলো একত্রে)

মতুয়াদের অমীমাংসিত সমস্যা ও আমার প্রস্তাবিত সমাধান (সবগুলো একত্রে)

১ নং প্রশ্নঃ কোন পবিত্র জায়গার নামকরণের ক্ষেত্রে ‘শ্রীধাম’ শব্দটি একমাত্র ওড়াকান্দি ব্যতীত ষোল পাট/ অন্য কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ গোঁসাইয়ের বাড়িকে বলা বা লেখা যাবে কি না?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
---মতুয়াদের তীর্থের মধ্যে শুধুমাত্র ওড়াকান্দির নামের পূর্বে ‘শ্রীধাম’ শব্দটি ব্যবহার করা যাবে অর্থাৎ ‘শ্রীধাম ওড়াকান্দি’ লেখা যাবে। 
--- ষোলটি শ্রীপাটের মধ্যে জয়পুর এবং লক্ষ্মীখালি এর নামের পূর্বে শ্রী হরিবর সরকার ‘ধাম’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন (মহাবারুণী)। তাই আমার মতে যে কোন শ্রীপাটকে ধাম বলা যেতে পারে, তবে অবশ্যই শ্রীধাম নয়। যেমন, বলা যেতে পারে ‘ধাম জয়পুর’ বা ‘জয়পুর ধাম’।
--- অন্য যে কোন মহামানব বা গোঁসাইয়ের বাড়ি বা এলাকাকে শাখা পাট বলা যেতে পারে, কারণ শ্রীহরিবর সরকার তাঁর মহাবারুণী বইতে শাখা পাট অসংখ্য বলে উল্লেখ করেছেন।

২ নং প্রশ্নঃ একমাত্র “শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত” ব্যতীত “শ্রীশ্রী লীলামৃত” শব্দটি অন্য কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ গোঁসাইয়ের জীবনী (বিশেষ করে মতুয়াদের ভিতরে) বস লীলা মাহাত্ম্য সমৃদ্ধ কোন বইয়ের নামকরণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে কি না?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- ‘শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত’ ব্যতীত মতুয়া দর্শনের উপর ভিত্তি করে রচিত কোন বইয়ের নামে “লীলামৃত” শব্দটি যোগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। লীলা কেবল স্বয়ং শক্তিধারী করতে পারে, বিষয়টি অনুধাবন করতে হবে। স্বয়ং হরি (হরিচাঁদ ঠাকুর) এবং হরি-শক্তি আশ্রিত গুরুচাঁদ ঠাকুর (শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ ঠাকুর) ব্যতীত মতুয়াদের মধ্যে কেহই লীলা করতে পারেন না। বিভিন্ন গুরু/ সাধু/ মহামানব/ গোঁসাইদের ক্ষেত্রে যা দৃষ্ট হয়, তা শ্রীহরির লীলা ব্যতীত কিছু নয়। শ্রীহরি ব্যতীত ইহাদের শক্তি কতটুকু। তাই ইনাদের কর্ম বা জীবনী গ্রন্থে ‘লীলামৃত’ শব্দটি ব্যবহার না করাই শ্রেয়।

৩ নং প্রশ্নঃ কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ গোঁসাই / সেবকের নিজস্ব আশ্রমের ভিতরে বা বাইরে প্রণামীর বাক্সে ঠাকুরের ছবির পাশাপাশি ঐ মহামানব/ সাধু/ গুরু/ গোঁসাই/ সেবকের ছবি ব্যবহার করা/ রাখা যাবে কি না?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- যে কোন মন্দিরের প্রণামী বাক্স একটি থাকবে। প্রণামী বাক্সে কারো ছবি ব্যবহার করা যাবে না। প্রণামী বাক্সের গায়ে শুধুমাত্র ‘প্রণামী বাক্স’ কথাটি লেখা থাকবে, ঠাকুর বা অন্য কারো ছবি নয়।

৪ নং প্রশ্নঃ শ্রীধাম ওড়াকান্দির ঠাকুর ব্যতীত অন্য কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ গোঁসাই/ সেবকের মতুয়া দল পাশ করার অধিকার আছে কি না এবং তারা মতুয়া দলপতিদেরকে হাতের ছোটা প্রদান করতে পারবে কি না এবং বহির্বিশ্বে কিভাবে দল পাশ ও ছোটা প্রদান করতে হবে?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- মতুয়া দল পাশ করার কোন বিধান রাখার কোন প্রয়োজন নাই। যে কেউ মতুয়াদের দলবদ্ধ করে মতুয়া দল গঠন করতে পারবে। এর জন্য ঠাকুর বাড়ি বা অন্য কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ গোঁসাই/ সেবকের অনুমোদনের কোন প্রয়োজন নাই।
--- ছোটা প্রদানের ক্ষেত্রে বিধানাবলী তৈরি করতে হবে। দলপতি হলেই ছোটা গ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। আবার একদলে একাধিক ছোটা গ্রহণকারী মতুয়া থাকতেও পারে। যাকেই ছোটা প্রদান করা হোক না কেন, তার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে (বিভিন্ন উৎস হতে, কোনক্রমেই একপাক্ষিক উৎস হতে নয়) লিখিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে মূল্যায়ন করে তবেই যোগ্য বিবেচিত হলে ছোটা প্রদান করা যাবে। তবে কোনক্রমেই ছোটা প্রদানের ক্ষমতা এককভাবে ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে থাকতে পারবে না। ‘মতুয়া দর্শন মূল্যায়ন পরিষদ’ গঠন করে তাদের হাতে এই দায়িত্ব দিতে হবে। 
--- দেশের বাইরেও দল পাশ করার কোন বিধানের দরকার নাই। ছোটা প্রদানের ক্ষেত্রে ‘মতুয়া দর্শন মূল্যায়ন পরিষদ’ মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করে ছোটা প্রদান করবে।

৫ নং প্রশ্নঃ মন্দিরে বা যে কোন ধর্মীয়/ মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে একই আসনে শান্তি হরির বিগ্রহ বা যুগল ছবির পাশাপাশি বা সমান্তরালভাবে অন্য কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ গোঁসাই/ মাতা-পিতার ছবি বা বিগ্রহ রাখা যাবে কি না বা রাখলেও তা কি ভাবে রাখতে হবে?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- মন্দিরে বা যে কোন ধর্মীয়/ মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে একই আসনে শান্তি হরির বিগ্রহ বা যুগল ছবির পাশাপাশি বা সমান্তরালভাবে অন্য কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ গোঁসাই/ মাতা-পিতার ছবি বা বিগ্রহ রাখা যাবে না। একই মন্দিরে যদি শ্রীহরি বা শান্তি-হরি এর সাথে অন্য বিগ্রহ রাখতে চাইলে হিসাব করে বেদী নির্মাণ করে স্থাপন করতে হবে। শ্রীহরি বা শান্তি-হরি এর বেদী অন্য যে কোন বিগ্রহের চেয়ে একটু উঁচু হবে ও অন্য বিগ্রহ একটু নীচে হবে; শ্রীহরি বা শান্তি-হরি এর সাথে সমান্তরালে রাখা যাবে না, শ্রীহরি বা শান্তি-হরি এর লাইন হতে একটু সামনে স্থাপন করতে হবে ও অন্য বিগ্রহ এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যেন তাদের দৃষ্টি শ্রীহরি বা শান্তি-হরির দিকে তাক করে থাকে। এমনকি গুরুচাঁদ ঠাকুরের বিগ্রহও শ্রীহরি বা শান্তি-হরির বিগ্রহের সাথে এক লাইনে বসানো উচিত।

৫ নং প্রশ্নঃ মন্দিরে বা যে কোন ধর্মীয়/ মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে একই আসনে শান্তি হরির বিগ্রহ বা যুগল ছবির পাশাপাশি বা সমান্তরালভাবে অন্য কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ গোঁসাই/ মাতা-পিতার ছবি বা বিগ্রহ রাখা যাবে কি না বা রাখলেও তা কি ভাবে রাখতে হবে?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- মন্দিরে বা যে কোন ধর্মীয়/ মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে একই আসনে শান্তি হরির বিগ্রহ বা যুগল ছবির পাশাপাশি বা সমান্তরালভাবে অন্য কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ গোঁসাই/ মাতা-পিতার ছবি বা বিগ্রহ রাখা যাবে না। একই মন্দিরে যদি শ্রীহরি বা শান্তি-হরি এর সাথে অন্য বিগ্রহ রাখতে চাইলে হিসাব করে বেদী নির্মাণ করে স্থাপন করতে হবে। শ্রীহরি বা শান্তি-হরি এর বেদী অন্য যে কোন বিগ্রহের চেয়ে একটু উঁচু হবে ও অন্য বিগ্রহ একটু নীচে হবে; শ্রীহরি বা শান্তি-হরি এর সাথে সমান্তরালে রাখা যাবে না, শ্রীহরি বা শান্তি-হরি এর লাইন হতে একটু সামনে স্থাপন করতে হবে ও অন্য বিগ্রহ এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যেন তাদের দৃষ্টি শ্রীহরি বা শান্তি-হরির দিকে তাক করে থাকে। এমনকি গুরুচাঁদ ঠাকুরের বিগ্রহও শ্রীহরি বা শান্তি-হরির বিগ্রহের সাথে এক লাইনে বসানো উচিত।

৬ নং প্রশ্নঃ মন্দিরে বা যে কোন ধর্মীয়/ মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে ঠাকুরের নামের ধ্বনি প্রদানের ক্ষেত্রে একই সাথে শান্তি হরির নাম উচ্চারণ করে ধ্বনি দেওয়ার সাথে সাথে অন্য কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ বৈষ্ণব/ গোঁসাইয়ের নাম সংযুক্ত করে আওয়াজ বা ধ্বনি দেওয়া যাবে কি না?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- মন্দিরে বা যে কোন ধর্মীয়/ মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানে ঠাকুরের নামের ধ্বনি প্রদানের ক্ষেত্রে একই সাথে শান্তি হরির নাম উচ্চারণ করে ধ্বনি দেওয়ার সাথে সাথে অন্য কোন মহামানব/ সাধু/ গুরু/ বৈষ্ণব/ গোঁসাইয়ের নাম সংযুক্ত করে আওয়াজ বা ধ্বনি দেওয়া যাবে, তবে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে করতে হবে; যেমন
------ যদি কেউ শুধু হরিচাঁদ ঠাকুরের নামে ধ্বনি দিতে চায়, তবে ‘জয় হরিচাঁদ ঠাকুরের জয়’ বা ‘হরিচাঁদ প্রীতে সবাই একবার হরি বল, হরিবোল’ ইত্যাদি ভাবে দেওয়া যাবে।
------ যদি কেউ গুরুচাঁদের নামে ধ্বনি দিতে চায়, তবে প্রথমে হরিচাঁদ ঠাকুরের নামে ধ্বনি দিতে হবে এবং পরে গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে ধ্বনি দিতে হবে। শুধু গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে ধ্বনি দেওয়া যাবে না, কিন্তু ‘হরি-গুরুচাঁদ’ নামে ধ্বনি দেওয়া যাবে, কারণ গুরুচাঁদে হরি শক্তি আশ্রিত হয়ে ‘হরি-গুরুচাঁদ’ নাম হয়েছে।
------ কেউ যদি গুরু/ গোঁসাই/ সাধু/ মহামানব/ মাতাপিতার নামে ধ্বনি দিতে চায়, দিতে পারবে। তবে ইনাদের নামে ধ্বনি দেওয়ার পূর্বে হরিচাঁদ ঠাকুরের নামে ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে ধ্বনি দিতে হবে। যেমন, যদি তারক চাঁদের নামে ধ্বনি দিতে হয়, তবে ‘ জয় হরি চাঁদের জয়, জয় গুরুচাঁদের জয়, জয় তারকচাঁদের জয়’ এভাবে দিতে হবে। শুধু ‘তারক চাঁদের জয়’ বা শুধু ‘জয় তারক চাঁদের জয়’ বলে ধ্বনি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। 
------ ধ্বনি দেওয়ার সময় সবসময় ক্রম মেনে চলতে হবে। প্রথমে হরিচাঁদ ঠাকুর, দ্বিতীয়ে গুরুচাঁদ ঠাকুর, তৃতীয়ে ভক্ত/ গুরু/ গোঁসাই/ মহামানব।

৭ নং প্রশ্নঃ প্রকাশিত বা অপ্রকাশিত হোক, কোন বইতে কোন লেখক শ্রী শ্রী হরি-গুরুচাঁদ ঠাকুর ও তার মতাদর্শ এবং শ্রীধাম ওড়াকান্দি ও ঠাকুর পরিবার নিয়ে কোন অবমাননাকর তথ্য প্রদান করলে উক্ত বইয়ের আপত্তিকর অংশগুলো/ মিথ্যা/ ভুলগুলো সংশোধন, পরিমার্জন; সর্বোপরি উক্ত বই নিষিদ্ধকরণ ও উক্ত লেখকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে কি না?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- প্রথমেই স্মরণ করিয়ে দেই, এই প্রশ্নোত্তর পর্বের ৪ নং প্রশ্নের উত্তরে আমি ‘মতুয়া দর্শন মূল্যায়ন পরিষদ’ নামে একটি পরিষদ গঠনের প্রস্তাব করেছি। এই পরিষদ কেন্দ্রিয়ভাবে পরিচালিত হবে। মতুয়া দর্শনের উপর রচিত যে কোন বই প্রকাশিত হওয়ার পূর্বে উক্ত পরিষদ যাচাই বাছাই করে দেখবে যে বই/ পাণ্ডুলিপিতে মতুয়া দর্শন বহির্ভূত কোন বিষয়বস্তু আছে কি না; যদি থাকে তবে তার ব্যাখ্যা লেখক উক্ত পরিষদের নিকট দিবে, যদি পরিষদ ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয় এবং ব্যাখ্যার সত্যতা থাকে তবে রাখবে, নতুবা সংশোধন/ পরিমার্জন/ অংশ বাতিল করবে এবং পরিষদের বক্তব্য যুক্ত করে বই প্রকাশিত হবে। উক্ত পরিষদের অনুমোদন ছাড়া কই বই প্রকাশিত হলে তা মতুয়া দর্শনের রেফারেস্ন হিসেবে ব্যবহৃত হবে না। 
---- ‘মতুয়া দর্শন মূল্যায়ন পরিষদ’ গঠিত হবার পরে পূর্বে প্রকাশিত সকল বই তারা যাচাই বাছাই করে সংশোধন/ পরিমার্জন/ অংশ বাতিল করে পুনঃ সংস্করণের ব্যবস্থা করবে।
---- শুধু শ্রীধাম ওড়াকান্দি নয়, ধাম/ শ্রীপাট/ পাট/ শাখাপাট বা কোন গোঁসাই এর কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে অবমাননাকর কিছু লেখা যাবে না। কোন ব্যক্তির কর্ম পর্যালোচনা/ সমালোচনা করা যাবে, কিন্তু কোন স্থান সম্পর্কে নয়। কিন্তু কোন ব্যক্তির সম্পর্কে যা লেখা হোক না কেন; তার উপযুক্ত ও প্রামাণ্য তথ্য দিতে বাধ্য থাকবে। যদি উপযুক্ত ও প্রামাণ্য তথ্য সন্নিবেশ করতে ব্যর্থ হয়, তবে উক্ত অংশ ‘মতুয়া দর্শন মূল্যায়ন পরিষদ’ বাতিল করে প্রকাশ করতে বাধ্য করবে।
---- যে যা লিখুক না কেন; শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর সম্পর্কে কোন নেতিবাচক বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। এর পরে ঠাকুর পরিবার হোক বা অন্য যে কোন ব্যক্তি/ মহাপুরুষ হোক, কেউই সমালোচনার উর্ধে নয়; তবে যে কোন নেতিবাচক সমালোচনার জন্য উপযুক্ত প্রামাণ্য তথ্য সন্নিবেশ করতে বাধ্য লেখক। নতুবা ‘মতুয়া দর্শন মূল্যায়ন পরিষদ’ তা বাতিল করবে।
---- যদি ‘মতুয়া দর্শন মূল্যায়ন পরিষদ’ কর্তৃক সুপারিশকৃত পরামর্শ কোন লেখক না মানে বা অমান্য করে মতুয়া দর্শনের উপর কোন বই প্রকাশ করে এবং তাতে মতুয়া দর্শনের তথ্য ও ভাবগত বিকৃত ব্যাখ্যা থাকে তবে প্রকাশক ও লেখকের বিরুদ্ধে উক্ত পরিষদ আইনানুগ ব্যবস্থা অবশ্যই গ্রহণ করতে পারবে অথবা যার/ যাদের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সমালোচনা করা হয়েছে তারাও আইনের দ্বারস্থ হতে পারবে।
---- সর্বোপরি, লেখা লেখকের স্বাধীন সত্ত্বার প্রকাশ, কিন্তু তা মতুয়া দর্শনের অন্তর্ভুক্ত হবে কিনা তা সবসময় লেখকের মননের উপর নির্ভর করবে না। এই সত্য মেনে নিতে হবে।

৮ নং প্রশ্নঃ মতুয়া দলের নিশান লাল ও সাদা রং এর ব্যতীত অন্য কোন রং এর হবে কি না?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- মতুয়া দলের নিশান হবে লাল এবং তার বাউণ্ডারি হবে সাদা কাপড়ের তৈরি। এর ব্যত্যয় দেখামাত্র উক্ত দলকে প্রথমত তাদেরকে বিষয়টি বুঝিয়ে সতর্ক করে দিতে হবে। এতে যদি তারা সংশোধিত না হয়, তবে এর ব্যাখ্যা দাবি করতে হবে এবং সামাজিকভাবে উক্ত দলকে বয়কট করতে হবে। তাদেরকে সতর্ক করার বিষয়টিও ‘মতুয়া দর্শন মূল্যায়ন পরিষদ’ করবে। আরও একটি বিষয়, তা হল অনেকেই নিশানের মধ্যে কিছু লেখা দিয়ে থাকে, যা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

৯ নং প্রশ্নঃ একমাত্র শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামের পূর্বে “শ্রীশ্রী” ও “রাজর্ষি” শব্দটি লেখা এবং ঠাকুরের ছবির পেছনে “ব্রহ্ম জ্যোতি/ ঐশ্বরিক জ্যোতি” চিহ্ন ব্যবহার ব্যতীত অন্য কোন সাধু/ গুরু/ গোঁসাই/ সেবকের নামের পূর্বে “শ্রীশ্রী” ও “রাজর্ষি” শব্দ লেখা/ ব্যবহার করা যাবে কি না এবং অন্য কোন সাধু/ গুরু/ গোঁসাই/ সেবকের ছবির পিছনে/ পোস্টারে/ লিফলেটে উক্ত “ব্রহ্ম জ্যোতি/ ঐশ্বরিক জ্যোতি” চিহ্ন ব্যবহার করা যাবে কি না?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- মতুয়া পরিমণ্ডলে ‘শ্রীশ্রী’ শব্দটি শুধুমাত্র হরিচাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুর (হরি-গুরুচাঁদ ঠাকুর) এর নামের পূর্বে ব্যবহার সীমিত করতে হবে। 
--- ‘রাজর্ষি’, ‘মুক্তি বারিধি’ উপাধি শুধুমাত্র গুরুচাঁদ (হরি-গুরুচাঁদ) ঠাকুরের নামের পূর্বে ব্যবহার করা যাবে।
--- ‘ব্রহ্ম জ্যোতি/ ঐশ্বরিক জ্যোতি’ স্বয়ং শক্তি সম্পন্ন শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর ও স্বয়ং শক্তি আশ্রিত শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের ছবির পিছনে এবং মাতৃকুলের মধ্যে শান্তি মাতা ও সত্যভামা দেবীর ছবির পিছনে ব্যবহার করা যাবে। অন্য কারো ছবির পিছনে ‘ব্রহ্ম জ্যোতি/ ঐশ্বরিক জ্যোতি’ ব্যবহার করা যাবে না। 
--- প্রশ্নে উল্লেখ নাই, তবুও প্রাসঙ্গিক বিধায় এখানে উল্লেখ করছি। অনেক গোঁসাই/ গুরু/ মহামানব এর অনুসারী শিস্যগণ তাদের গুরু/ গোঁসাই/ মহামানবকে পদ্ম ফুলের উপর বসিয়ে ছবি প্রচার করেন। এটা বন্ধ করতে হবে। পদ্ম ফুলের উপর বসিয়ে শুধুমাত্র শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর ও শান্তিমাতার ছবি করা যাবে। 
--- পূর্ণব্রহ্ম শব্দটি শুধুমাত্র হরিচাঁদ ঠাকুরের নামের পূর্বে ব্যবহার করা যাবে।

১০ নং প্রশ্নঃ শ্রীধামের মহাবারুণীর মেলা ব্যতীত অন্য কোন স্থানে বারুণী মেলা অনুষ্ঠিত হলে উক্ত “বারুণী” শব্দটির আগে “মহা” শব্দটি ব্যবহার করা যাবে কি না বা শ্রীধামের মহাবারুণী ছাড়া অন্য কোন বারুণী মেলা কে “শাখা/অভিসার বারুণী মেলা” নামে অভিহিত করা/ লেখা যাবে কি না?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- মতুয়া পরিমণ্ডলে শুধুমাত্র শ্রীধাম ওড়াকান্দিতে ‘মহাবারুণী’ হবে বা ‘বারুণী’ এর পূর্বে ‘মহা’ শব্দটি ব্যবহার করা যাবে। অন্য যে কোন শ্রীপাট বা গুরু/ গোঁসাই এর আশ্রমে যদি স্নানের আয়োজন হয়, তবে সে সব ক্ষেত্রে কোনভাবেই ‘মহাবারুণী’ ব্যবহার করা যাবে না। তারা ‘শাখা বারুণী’ শব্দটি ব্যবহার করতে পারবে। মেলার নামকরণের ক্ষেত্রেও ‘মহাবারুণী’ শব্দটি এড়িয়ে চলতে হবে।

১১ নং প্রশ্নঃ শ্রীধামের মহাবারুণীর স্নানের দিনে মেলা প্রাঙ্গণে ও তার আশেপাশে কোন জায়গায় আমিষ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ নিষিদ্ধকরণ ও এ বিষয়ে একটি তদারকি কমিটি/ টাস্কফোর্স গঠন করা যাবে কি না?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- আমিষ আহার গ্রহণ/ বর্জনের জন্য মতুয়া দর্শনে কোন বিশেষ বিধান নাই, সে হোক কোন সাধারণ দিন বা মহাবারুণীর দিন। মতুয়া দর্শনে আমিষ কোন অশুদ্ধ আহার নয় বা নিশিদ্ধ কোন বিষয় নয়, তাই অন্যান্য মতাদর্শের অনুকরণে এমন কোন বিধান বা বিধিনিষেধ তৈরি করা উচিত হবে না। বিষয়টি ব্যক্তির উপর ছেড়ে দিন। 
--- অনেক গুরু/ গোঁসাই বৈষ্ণবপন্থীদের অনুকরণে মতুয়াদের বুধবারে নিরামিষ খেতে বলেন; বিষয়টি আমার কাছে মোটেও বোধগম্য নয়। খাদ্যের ব্যাপারে মতুয়াদের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকা উচিত, সে যে কোন দিনই হোক না কেন। তবে খাদ্যগুণ বিচারপূর্বক সকলকে সহনশীল ও গ্রহণযোগ্য পরিমাণ আহারের পরামর্শ প্রদান করা যেতে পারে, তবে কোন প্রকার নিষেধাজ্ঞা নয়।

১২ নং প্রশ্নঃ শ্রীধামে মহাবারুণী মেলার সময়/ অন্য কোন সময় ঠাকুর পরিবার ব্যতীত শ্রীধামে অন্য কোন সাধু/ গুরু/ গোঁসাই/ গদিনসীন হয়ে শ্রীধামে বসতে পারবে কি না?

আমার প্রস্তাবিত উত্তরঃ 
--- যে কোন শ্রীধাম বা শ্রীপাট বা পাট বা শাখা পাট; যেটাই হোক একটি স্থানে গদিনসীন একজন থাকতে পারবে। শ্রীধামের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম গ্রহণযোগ্য নয়। গদিনসীন কে হবেন, সেটা নির্বাচনের বিষয়ে আমি কোন মতামত প্রদান করছি না, তবে একজনই হবেন, এটাই আমার মন্তব্য। আরও একটি বিষয়, যিনি গদিনসীন হবেন তিনিই শুধু মাত্র প্রণামি বাক্স রাখতে পারবেন। 
--- অন্য গুরু/ গোঁসাই/ মহামানব/ শ্রীপাট কর্তাগণ চাইলে শ্রীধামে বসতে পারবেন, গদিনসীন হয়ে নয় ও কোন প্রণামী বাক্স রাখতে পারবেন না। প্রতিটি মন্দিরে শ্রীধামের উন্নয়ন কল্পে দান বাক্স স্থাপন করতে হবে, কোন ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য নয়। দান বাক্স্যে জমা হওয়া দান অনুষ্ঠানের পরে কোন একদিন সর্বসমক্ষে খোলা হবে এবং হিসাব রাখা হবে, এবং এই অর্থ অবশ্যই শ্রীধামের উন্নয়নে ব্যবহার করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।


 
শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুরের আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন। হরিবোল।
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free