মতুয়া দর্শন
শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া সমাজ
মতুয়া মত সত্য পথ

গান নং ৩৬-৪৯

৩৬ নং গানঃ তাল-
আর কিছু পাইনে সখী দেখিতে
নয়ন ফিরাতে জ্যোতি নাই তাতে,
গৌররূপ চপলা চকমকি চাকচকি লেগেছে চক্ষেতে।।
 
যদি গৌররূপ ভুলে থাকি।
তবে গৌরময় সকল দেখি, অসার সংসার সব ফাঁকি,
গৌর আমায় গৌর করল নাকি, কি হলেম সই কি হতে।।
 
যেন আমাতে আর নাই আমি,
ভেবে দেখি কার আমি, ও চাঁদ গৌরের আমি
ও সেই গৌরের গৃহিণী, হয়ে আছি গৌর গৃহেতে।।
 
আমি কি দেখিতে কি দেখি,
গৌর রূপের মধ্যে কি, যেন কাল মাণিক্য
শিরে শিখি পাখা বাঁকা আখি, বনমালা গলেতে।।
 
মহানন্দ বলে তারকেরে,
কাজ কি এবার সংসারে, কাজ কি এ জীবন ধরে
চল যাই গোলকচাঁদের চরণ ধরে, যাই গৌরের বাস হতে।।
 
৩৭ নং গানঃ তাল-দশকুশী
সইরে সই এত শুধু সোনা নয়।
সোনার মানুষ ব’টে গলে গেছে প্রেম সোহাগায়।।
 
মানুষ কাঁচা সোনা, মাজা নব রসানে,
ঝলকে পলকে রূপ দু’নয়নে।
ওরূপ হেরিলে কুল যায়, কুলজার কুল যায়, শেষে প্রাণ যায়
ও প্রাণ যায় যদি, সেও ত’ ভাল, তারে পাওয়া যায়।।
 
সঙ্গে আর এক মানুষ রজত সোনায় ঘেরা,
চাঁদ যেমন বিদ্যুৎ মাখা, মন হরা।
তারে হেরিয়া দিবাকর, মলিন হয়ে রয় না কর, মলিন নিশাকর
পদ-নখরে পুষ্পবন্ত যোগ উদয়।।
 
ও যার রূপের ছাপা, দিয়াছে দু’জনার গায়,
সে আবার কেমন মানুষ রয় কোথায়
সে জন মানে না মহাজন, তারে পাবে কোন জন, করে কোন ভজন
সে জন সুজন কি, যার নাই নারী বধের ভয়।।
 
জেনে জানিস না সই, গারদ ভাঙ্গা চোর ওরা,
কি দেখে পাগলিনী হস তোরা।
যে জন ফেরারের চোর নির্বোধ, কেন ভাঙ্গল গারদ, মহাজনের ক্রোধ
লবে এইবার শোধ, খাটায়ে ন’দের জেলায়।।
 
মহানন্দ বলে সেই মানুষ কি পাওয়া যায়,
যারে মজায় সেই বিনে কি অন্যে পায়
আমার সেই মানুষ হরিচাঁদ, পেয়েছে গোলকচাঁদ, চাঁদে মিশিল চাঁদ
সে চাঁদ না পেয়ে তারকের দিন বৃথা যায়।।
 
৩৮ নং গানঃ তাল-দশকুশী
আমার গোঁসাইর কি ভাব, ভাবেই অন্ত কেবা পায়।
রাধা ঋণ শোধিত কি এত দায়।।
 
চৌদ্দ ভুবনেশ্বর, কে আপন তার কেবা পর
কার জন্যে কাঁদেরে সে নিরন্তর।
চৌদ্দ ভুবন হয় যার ঋণী, সে আবার কার ঋণী, এসব ভাব ঋণী।
ও এমন কে আছে তার ঋণের ভার কুলায়।।
 
রাধার ভাব ত’ বড়, এ বড় পদ কেবা দেয়,
যে বড় সে কত বড় ছোট হয়।
হ’ল দুই অঙ্গে এক অঙ্গ, শ্যামাঙ্গে পীতাংগ, শোভা করে অঙ্গ।
ও সে যার অঙ্গ তারই অঙ্গেতে মিশায়।
 
মহাভাব শ্রীরাধার এ মহাভাব কেবা দেয়,
যে গোপীর উৎপত্তি হয় যার ইচ্ছায়।
ও তার ঋণ শোধিতে কতক্ষণ, যে দিন হয় মুক্ত বন জানি বিবরণ,
মায়াপুরীতে কত রাধা তার দ্বারী হয়।।
 
রাধার অন্তকারী কোটি রাধা যার দ্বারী,
সে কি হয় একটা রাধার দেনাদারী।
ও তার ফিকির বুঝিবে কে, রাধাকে ব্রহ্মাকে শুক শিব বাল্মীকে
ও সেই কৃষ্ণদাস কি লিখে তার সাধ্য হয়।।
 
গোঁসাই গোলকচাঁদ কয়, ও তার ভাব জেনে আর কার্য নাই
আয় সবে হরিচাঁদের গুণ গাই।
যদি তরবি এই ভবশমন, ভজ তার শ্রীচরণ, পাবি নিত্য ধন
সে ধন না পেয়ে, তারকের দিন বৃথা যায়।।
 
৩৯ নং গানঃ তাল-গড়খেমটা
সাধে কি গৌর বলি সই, মনে ‘ত বোঝে না বেঝে না।
আমার প্রাণ কাঁদে চাঁদ গৌর বলে প্রাণে ধৈর্য মানে না।।
 
সইরে পুড়ে গৌর প্রেমের পোড়া
আমি পোড়ায় পোড়ায় হলেম পোড়া
তবু পোড়া মন ‘ত বোঝে না গো (২)
গৌর প্রেমের পোড়া বিনে, আর কি ভাল আছে বল না।।
 
আমার প্রাণ কাঁদে চাঁদ গৌর লাগি,
গৌর না হয় যদি দুঃখের ভাগী,
অভাগীর দায় কি বল না গো।
আমার যায় যাবে প্রাণ গৌর বলে, পড়ে মরব ফিরব না।।
 
আমার প্রাণ গৌরের মনের মত,
সইরে যদি আমার মন না হত
তবে মন চুরি করত না গো
আমার মন হল তার মনের মত, আমি তার কি হলেম না।।
 
আমার মন চুরি করে চোরা,
সইরে যদি গৌর না দেয় ধরা,
তবে কি করব বল না গো
আমার মন চুরি করে সে ও কি আমায় মনে করবে না।।
 
গোঁসাই গোলকচাঁদ কয় আর হব কার,
মন প্রাণ নিল হরিচাঁদ আমার
দেখ প্রাণ রাখতে পারলেম না গো
নিজের কর্মদোষে প্রেমের মর্ম, তারক জানতে পারল না।।
 
৪০ নং গানঃ তাল-ঠুংরি
তুমি যা কর গো রাই, প্রেমময়ী আমি তোমার প্রেম ভিক্ষারী
তুমি গুণের আধার, আমি তোমার গুণের বলিহারী।
 
জানি নে রাই অন্য বিদ্যে, প্রাণ সঁপেছি শ্রীপাদপদ্মে,
অনাদ্যে অন্যের ঈশ্বরী
তোল বিধু বদন মধুমাখা, আমি বাঁকা চক্ষে হেরি।।
 
রাধে তোমার ভাব সাগরে, লাবণ্য অমৃত ধারে,
প্রেম পাথারে ছাড়লেম দেহতরী।
আমি আস্বাদিতে চাই হে, ও প্রেম আস্বাদিতে নারি।।
 
তুমি যদি থাক সুখী, সেই সুখে রাই সুখে থাকি,
সেই সুখে জগত সুখী করি।
তুমি সুখে থাক, আমি তোমার বালাই লয়ে মরি।।
 
ভাব কান্তি দাও রাই কিশোরী, ভাব কান্তি অঙ্গীকার করি,
নবদ্বীপে সব দণ্ডধারী
হয়ে হালছে বেহাল পথের কাঙ্গাল, জন্মের মত হব দেনাদারী।।
 
রাধা ঋণ শোধিবার তরে, এসে এ তিন লীলার পরে,
উদয় হলেন উড়িয়া নগরী।
দেখে দীনেরও দীনে, তারকের পদে রেখে কিশোরী।।
 
৪১ নং গানঃ তাল-গড়খেমটা
তোরা কি প্রেম করিবি, পাগল হবি, ধরিবি কি পাগলের বুলি।
গৃহে থাক আছিস ভাল, তোরাই ভাল, কেন দিবি কুলে কালী।।
 
পাগলের পাগলা ধরণ, উলটা করণ, রসের পাগল প্রেম পুতলী।
দেখে পাগলের কর্ম, ধর্মাধর্ম, সকল দিবে জলাঞ্জলি।।
 
থাকবে না দিক বিদিক, কেবল নিরিখ, মন থাকবে এক মানুষ বলি।
পাগলের সঙ্গ নিবি পাগল হবি, সারবে না তা বিষ্ণু তৈলী।।
 
থাকবে না তন্ত্র মন্ত্র, মূল মন্ত্র, দীক্ষা শিক্ষা কপ্নীর ঝুলি।
থাকবে না সাধ্য সাধন, বেদের কারণ, কাঁদবি শেষে গলি গলি।।
 
গোপীদের রাগের ভাজন, মন্ত্র যাজন, কোন গোপীদের গ্রন্থে পালি।
গোপীর ভাব কৃষ্ণ ভক্তি, কৃষ্ণে আর্তি, প্রাণ বাঁচে সেই কৃষ্ণে পালি।।
 
গোপীর ভাব দেহ অর্পণ, জীবন নয়ন, এ দেহ সেই কৃষ্ণ বলি।
গোপীর ভাব সেই স্বরূপে, বিষয় কূপে, তারক কেন ডুবে রলি।।
 
৪২ নং গানঃ তাল-একতালা
ওগো প্রাণ সজনী, একাকিনী, কেন বা গেলাম জল আনিতে।
দেখলেম রক্ত বরণ, ভুবনমোহন, মন চলে না গৃহে যেতে।।
 
একাকিনী গেলাম ঘাটে, দেখলেম পুষ্করিণী তটে,
রূপ যেন বিজলী ছোটে, দেখলেম সে রূপ কটাক্ষেতে।
মন প্রাণ নিল চোরে, হরিরূপ চক্ষে হেরে,
দিবানিশি গুণ গুণ স্বরে, প্রাণ কাঁদে তার বিরহেতে।।
 
দেখে এলাম কি অপরূপ, ভুবনে দেখি নাই সেই রূপ,
দেখে সেই রূপের স্বরূপ, পারি না আর ভুলিতে।
যে দিকে ফিরাই আঁখি, হরিময় সেই দিকে দেখি,
ওরে ঝর ঝর ঝরে আঁখি, বুক ভাসে চোখের জলেতে।।
 
শুধু গৌর রূপ নয় কখন, ভিতরেতে রক্ত বরণ,
দেখে সেই রূপের কিরণ, চিক্‌ লেগেছে চক্ষেতে।
তাড়িত বিদ্যুতের মত, ঝলক দেয় অবিরত,
আমার প্রাণ হয়েছে ওষ্ঠাগত, দেখতে চায় সে প্রাণনাথে।।
 
গোঁসাই মহানন্দের এই মিনতি, করব আমরা হরিপতি,
গুরুপদে হবে আর্তি, পারবি তারে ধরিতে।
ডেকে কয় তারক চন্দ্র, অশ্বিনীর কপাল মন্দ,
হরিচাঁদের পদারবিন্দ, ভজলি না সংসারে মেতে।।
-------------- অশ্বিনী গোঁসাই
 
৪৩ নং গানঃ তাল-একতালা
চল চল গো সখী, দেখবি নাকি, এক সোনার মানুষ এসেছে।
ওগো কুলবালার কুল নাশিতে, নবীন চাঁদ উদয় হয়েছে।।
 
শিব পুজার ফুল তুলিতে, গিয়াছিলাম সকালেতে,
দেখে এসেছি পথে, ভুবন আলো করেছে।
ভক্তগণ সঙ্গে লয়ে, পুকুর পাড়ে বসিয়ে,
প্রেমেতে উন্মত্ত হয়ে, সংকীর্তনে মেতে গেছে।।
 
শাক্ত শৈব কি সন্ন্যাসী, যোগ ভুলে সব যোগী ঋষি,
ঐ প্রেমে ডুবিল আসি, কুলের কি আর কুল আছে।
প্রেম সিন্ধুর জোয়ার এসে, পূর্ববঙ্গ গেল ভেসে,
কর্মী জ্ঞানী ডুবল এসে, কর্ম ফাঁস কেটে গিয়েছে।।
 
অগণিত রবি শশী, চরণে পড়ছে খসি,
দেখতে পাই রাশি রাশি, পদ নখরে ভাসতেছে।
চাঁদ সূর্য তমঃ হন্তি, চিত্তের আঁধার না হয় শান্তি,
আজ হইতে ঘুচল ভ্রান্তি, হরিচাঁদ উদয় হয়েছে।।
 
বেদ পঠিত বিপ্র যারা, ঐ প্রেমে ডুবল তারা,
নয়নে বহে ধারা, বেদ বিধি ধুয়ে গেছে।
দণ্ডিতে কর্মী জ্ঞানী, এসেছে ঠাকুর মণি,
ডুবল যত ধনী মানী, কুলের গৌরব আর কি আছে।।
 
হরিচাঁদ পাবার লাগি, গোলকচাঁদ হ’ল বিরাগী,
হীরামন সর্বত্যাগী, চাঁদ বলে সে কাঁদতেছে।
তারকচাঁদ চকোর হ’য়ে, সেই চাঁদের সুধা পিয়ে,
ওগো বিষয় মদে মত্ত হ’য়ে, অশ্বিনী ভুলে রয়েছে।।
-------- অশ্বিনী গোঁসাই
 
৪৪ নং গানঃ তাল-রাণেটি
তোরা দেখসে আসি ব্রজবাসী ব্রজঙ্গনা,
এসেছে ঠিক যেন সেই কেলেসোনা।।
রাধা রসে গোরা, এমন পোরা আর দেখবি না।।
 
তেম্নি গোরার আঁখির ভুরু, তেম্নি রামরম্ভা উরু,
তেম্নি ওর মনচোরা কটি সরু,
যেমন ব্রজে ছিল নন্দ-নন্দন, তেমনি মত অঙ্গ গঠন, কাঁচাসোনা।।
 
করে ধ্বনি রা-রা-রা-রা, যুগল চক্ষে শত ধারা,
ধা ব’লে অধর হয়ে পড়ে ধারা,
মুখে হা রাই! হা রাই! ধ্বনি, কি ধন হারায়ে ধনীর এ যন্ত্রণা।।
 
৪৫ নং গানঃ তাল-যৎ
তোরা দেখে যা, দেখে যা সহচরী,
হিংসাদ্বেষ লেশ শূন্য, কলুষী করিতে ধন্য একাচারী।।
 
ব্রাহ্মণ চণ্ডাল তাঁতি, জোলা মুচি হাড়ি জাতি গো
সবে মিশেছে ব’লেছে হরি গো,
যে জন বলে হরি হরি, নাহি জাতির বিচার করি গো
বললে হরিবোল, দিচ্ছে কোল ধরি গো।।
 
পূর্বে এই বৃন্দাবনে, কৃষ্ণ কাতর রাধার সনে গো
এল হৃষীকেশ নানা বেশ ধরি গো
রাই রূপেতে গিলটি করা, এল বুঝি মনচোরা গো
সদা কিশোরী কিশোরী স্মরি গো।।
 
ঐ যে গৌর রূপের মাঝে, কালরূপ অপরূপ সাজে গো
মোহনচূড়া মাথে বাঁশি হাতে করি গো
বুঝি পুনঃ এল বৃন্দাবনে, রাধার কথা মনে পড়ে গো
কাল ভ্রমণ গুঞ্জে, কুঞ্জে নাই কিশোরী গো।।
 
৪৬ নং গানঃ (চালক)
মোহন মূরতি শোভা, রতি পতি মতি শোভা
তোরা শুনে যা, দেখে যা কুলজা গো।।
 
যেন তরুণ অরুণ বরণ গো
কিবা স্মরণ বরণ কিরণ গো।
 
করে করঙ্গ গৌরাঙ্গ করে রঙ্গ
সখী কে হ’ল গৌরাঙ্গের বৈরংগ
 
রাধা প্রেমে তোর কৌপীন ডোর পরনে গো
ভয় নাই মরণে চরণে গো।
 
পেল তাপিনী গোপিনী সুসময় গো
এলো দয়াময় রসময় অসময় গো।
 
হয় না শমন ভবন গমন গো
রাধার মন শমন দমন গো।।
 
৪৭ নং গানঃ তাল-রাণেটি
যেন অকলঙ্ক কালশশী, ভূতলে পড়েছে খসি গো
শ্রীহরিচরণ পাবি হরে কর  শ্রীচরণ আরাধনা।
-------- হরিবর সরকার
 
৪৮ নং গানঃ তাল-ঢিমে তেওট
আমি কি দেখলাম সুরধনীর পুলিনে
দেখে বরণ লাল ভাবলেম শচীর দুলাল
শেষে মন ডুবিল ষড়ভুজ সুদর্শনে।।
 
দেখলেম অপরূপ রূপ ভুবনে নাই সে রূপের স্বরূপ
রূপাভিমানীর মন ডুবে রূপের কিরণে।।
 
৪৯ নং গানঃ তাল-যৎ
এমন রূপ আর দেখি নাই ওগো ভাই,
দেখবি যদি গুণনিধি আয় আয়।
সে যে তিনে এক একে তিন, ক্ষ্যাত কালো গৌরাঙ্গ কায়।।
 
দুইখানি হাত মেঘের বরণ, দুইখানি হাত চাঁদের কিরণ,
হায়রে আরও দুইখানি হাত কাল বরণময় রে
করে করে কড়া দণ্ড বান, বাঁশি ধনুর্দ্দণ্ড কি শোভা পায়।।
 
হল যেন কি ধন হারা, তাইতে করে আরাধনা সইরে
আমার কঠিন হৃদয় তাইতে এত সইরে সইরে
দেখলেম আ রা রা সাগরের মাঝে, একবার ভাসে একবার তলায়।।
 
ত্রেতায় রাম জগতের কর্তা, হ’ল জনকের জামাতা সইরে
আমার মনে বলে তারই হস্ত অই রে
যদি জনকের জামাতা হত, রাখতেম তুলে আমার হৃদয়।।

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুরের আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন। হরিবোল।
This website was created for free with Own-Free-Website.com. Would you also like to have your own website?
Sign up for free